জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত নারীদের ৬৪ ভাগই মারা যান

ঢাকা, রবিবার, ১০ জানুয়ারি ২০২১ (স্বাস্থ্য ডেস্ক): ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে নারী ক্যানসার রোগীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের পরই জরায়ুমুখের ক্যানসারের অবস্থান। প্রতি বছর এই রোগে ৮,০৬৮ জন নারী নতুন করে আক্রান্ত হন যা নারী ক্যানসার রোগীর প্রায় ১২%। এর মাঝে মারা যান ৫,২১৪ জন। আক্রান্ত তুলনায় মৃত্যুর হার ৬৪ ভাগ। শনিবার (৯ জানুয়ারি) দেশে ৫ম বারের মতো পালিত হলো জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতা দিবস। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় শনিবার ‘মার্চ ফর মাদার’ নামের মোর্চার উদ্যোগে এই দিবসটি পালিত হয়। এ উপলক্ষ্যে শনিবার বিকেল ৩টায় জুম প্ল্যাটফর্মে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘এইচপিভি নামের দুষ্ট ভাইরাসকে জানুন’। দেশের খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ, ক্যান্সার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই আলোচনায় অংশ নেন। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক টি এ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জননীর জন্য পদযাত্রার প্রধান সমন্বয়কারী ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিনের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে এইচপিভি ভাইরাস ও এর সাথে জরায়ুমুখসহ অন্যান্য ক্যান্সার ও নন-ক্যান্সার স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউ এর গাইনি অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা, জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. রোকেয়া আনোয়ার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অনকোলজি ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কাশেফা খাতুন। আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ক্যানসার স্ক্রিনিং কর্মসূচি বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০০ সরকারি হাসপাতলের ভায়া সেন্টারে চালু আছে। কিন্তু এগুরো অসংগঠিত ও হাসপাতালকেন্দ্রিক। একে সমাজভিত্তিক সংগঠিত রূপ না দিলে ঝুঁকিপূর্ণ নারীদের এর আওতায় আনা কঠিন। এর বাইরে সরকারি-বেসরকারি কিছু উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে, এটা আশার কথা। তবে সঠিক পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি জাতীয় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার আওতায় জাতীয় ক্যানসার স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম এখন সময়ের দাবি। সভায় বক্তারা মত প্রকাশ করেন, কেবল সরকারের দায়িত্ব নয়, চিকিৎসকসমাজ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যান্য অংশীজন, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে সমন্বিত প্রচেষ্টায় ক্যানসার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি সম্ভব। পুরো জানুয়ারি মাস জুড়ে ঢাকার বাইরে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে প্রচারাভিযান চালানোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হয় এই অনুষ্ঠানে।